সিএইসটি ডেস্কঃ
পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করতে হবে, বোঝাতে হবে। না হলে বিরোধিতার সৃষ্টি হবে। এই চুক্তি পাহাড়ের শান্তির জন্যে। অনেক অভিজ্ঞ সংবিধান বিশ্লেষকদের নিয়ে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে সেখানে নতুন করে কোন বিশেষ শাসনব্যবস্থা হচ্ছে না, ব্রিটিশ আমল থেকে সেখানে বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো। এই চুক্তি শুধু সেই শাসনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক সাংসদ উষাতন তালুকদার আরও বলেন “পাহাড়ের মানুষ এদেশেরেই মানুষ। তাদেরও সমভাবে বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বত্ত্বাকে মেনেই আমরা চুক্তি করেছি।”
দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণাপূর্বক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি আরও বলেন, “ পার্বত্য চুক্তি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির দায় সরকারকে নিতে হবে।”
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, “এই চুক্তি হয়েছিলো তৎকালীন অধিষ্ঠিত বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন, অত্যাচার শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের দাবিতে, গ্রামে গঞ্জে, শহরের আনাচে কানাচে সংগ্রাম চালিয়েছে। আজ আমরা উত্তরসূরীরা তার চেয়েও অধিক আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, “আজ সরকার মগ পার্টি, কুকি চিন সহ আরো কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নিয়ে যে একটা ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সেটা কখনো সফল হবে না।”
সমাবেশের সভাপতি রেং ইয়ং ম্রো বলেন, “দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে আপনি কথা বলতে পারবেন না। আপনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারবেন না। এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করে রেখেছে শাসকগোষ্ঠী।”
বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক অংশৈসিং মারমা বলেন, “চুক্তির মৌলিক ধারা “ভূমি অধিকার” ফিরিয়ে দেওয়ার বদলে আজ চিম্বুকের ম্রো পাড়া, লামার শত শত একর জুম ভুমি বেদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। লামার সরই ইউনিয়নে আদিবাসীদের জুম ভূমি পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, ঝিরিতে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমরা এই ধরণের নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানাই।”
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন আদিবাসী যুব ফোরামের দপ্তর সম্পাদক মনিরা ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
More Stories
বাংলাদেশে আদিবাসীদের ভূমিতে কোয়ান্টামের নিরবচ্ছিন্ন দখল আক্রমণ
কেন বৌদ্ধ সমিতির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন দায়ক দায়িকারা
‘বিপুল চাকমারা হাজারো বিপ্লবী জন্ম দিয়ে গেছেন’