May 19, 2024

Always worth looking into

 যদি সুষ্ঠু  বিচার না পায়, হয়ত নিজের জীবন নিজেই শেষ করতে পারিঃ কবি রাধাপদ রায়

সঞ্জয় কুমার বড়ুয়া

“আমি সরকারের কাছে সুষ্ঠু বিচার চায়।আমার গায়ের ব্যাথা, কোমড়ের ব্যাথা মলম দিলে হয়ত যাবে, কিন্তু মনের ব্যথাতো আমার যাবে না। আমার বয়স একাশি বছর চলে।এই বয়সে আমি যে মার খেলাম, আমি জনগণের কাছে কেমনে মুখ দেখাব”, বলছিলেন ‘স্বভাবকবি’ খ্যাত রাধাপদ রায়।  

“আমি যদি সুষ্ঠু বিচার না পায়, হয়ত নিজের জীবন নিজেই শেষ করতে পারি।আমি মনে এত বড় দুঃখ পেয়েছি” কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন তিনি।

“কেন আমাকে এভাবে আঘাত করা হল তা আমি এখনো বুঝতে পারছি না। তবে যে লোক আমাকে মেরেছে তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে পারিবারিক কথা নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল সাত মাস আগে”, বলেন রাধাপদ রায়।

“তারা তেল দিয়ে আমার গোঁফ–দাড়ি টানাহ্যাঁচড়া করে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর আমাকে নির্মমভাবে বুকে,পিঠে, আঘাত করে”, তিনি বলেন।

গত শনিবার সকালে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নন্দনপুর মৌজার ডুবরির ব্রীজ এলাকায় কবি রাধাপদ রায় হামলার শিকার হন। পাশের এলাকার দুই ভাই—মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলীর বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ ওঠে। কবিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় কবির ছেলে যুগল রায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে পথরোধ করে শনিবার সকালে রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা চালানো হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

দুই ভাই মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কবির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত কবি।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, “আমরা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আশা করছি দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে পারব।”

“তারা আমার বাবাকে গলা চেপে হত্যা চেষ্টা করেছিল। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই” বলেন কবির ছেলে যুগল রায়।

গ্রামের মানুষের কাছে নিজের লেখা কবিতা সুরে সুরে আবৃত্তি করা রাধাপদ রায় গত প্রায় এগারো বছরে ৯০টিরওবেশি আধ্যাত্মিক ও গ্রামীণ কবিতা রচনা করেছেন বলে জানান। নিজ গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় তিনি গ্রামীণ কবি হিসেবে পরিচিত।

প্রায় সাত বছর আগে রঙতাল নামে গ্রামীণ একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন তিনি।

পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করা এ কবির কবিতা সমূহ নীতিকথামূলক এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ যা নিজ অঞ্চলের গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।