November 21, 2024

Always worth looking into

বাংলাদেশে এখনও সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি

সিএইসটি ডেস্কঃ

মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পরও বাংলাদেশে এখনও একটি সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

দেশের ২৪ নাগরিকের যৌথ এই বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কারিগরী স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন সংযোজনের যে ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত; কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেওয়া যায়না। এসব বিষয় আমাদেরকে ক্ষুব্ধ করেছে। 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পরও ৩০ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একটি সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩ টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা গ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদ্রাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদ্রাসায়।

অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকরা নিজেদেরকে এই পদ্ধতি উপযোগী গড়ে তুলতে পেরেছেন কিনা- তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক- শিক্ষার্থী সকলকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে। অতি সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু  প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে। পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেওয়ার যে দাবি  তুলেছেন, তাও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও মুক্ত চিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমণ্ডূকতায়  ঠেলে দেবে, উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতি প্রদানকারীরা হলেন, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সভাপতি, ঐক্য ন্যাপ , অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল,  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা , রামেন্দু মজুমদার, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক  সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সভাপতি, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ. এস.এম.এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী,  এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, পারভেজ হাসেম, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট , আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট, এম এ সামাদ, সমাজকর্মী, ড. সেলু বাসিত, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী, রনজিৎ কুমার সাহা, সিনেট সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী,  অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী, আব্দুর রাজ্জাক, শ্রমিক সংগঠক, আবদুল আলীম, মানবাধিকার কর্মী, দীপায়ন খীসা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, এবং গৌতম শীল, সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)।