November 23, 2024

Always worth looking into

২৫ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের পরিস্থিতি দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে

সিএইচটি ডেস্কঃ

২৫ বছরেও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের পরিস্থিতি দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে বলে মনে করছে চার ছাত্র সংগঠন।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো রোডম্যাপ ঘোষণা করে পার্বত্য চট্টগাম চুক্তি যথাযথ ও দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবিও জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন,  বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী,  এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যৌথ এই বিবৃতিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে সম্পাদিত ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৫ বছরেও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে কাঙ্খিত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং পরিস্থিতি বছরের পর বছর জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে।

চার সংগঠনের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুমন মারমা,  বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাশ আলো এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃর দেয়া এই বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী আওয়ামীলীগ সরকার একনাগাড়ে ১৪ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকেও পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি এবং চুক্তি বাস্তবায়নে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে ৭২ টি বিষয়ের মধ্যে ৪৮ টি বাস্তবায়িত হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে যা অসত্য এবং অপপ্রচার। বাস্তবিকপক্ষে চুক্তির ২৫ টি বিষয় বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র। মৌলিক বিষয়সহ এখনো চুক্তির দুই তৃতীয়াংশ বিষয় অবাস্তবায়িত রয়ে গেছে।

 চুক্তির মৌলিক বিষয়— পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণে আইনী ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সাধারণ প্রশাসন, আইন—শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, পর্যটন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদিসহ রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও কার্যাবলী হস্তান্তর করা;  নির্বাচনী বিধিমালা ও স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন পূর্বক আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা;  ‘অপারেশন উত্তরণ’ ও সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা;  বিধিমালা প্রণয়ণ করে ভূমি কমিশনের মাধ্যমে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করে বেদখল হওয়া জায়গা—জমি জুম্মদের নিকট ফেরত দেয়া;  ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তুদের তাঁদের স্ব স্ব জায়গা—জমি প্রত্যার্পণ পূর্বক যথাযথ পুনর্বাসন প্রদান করা;  অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিল করা;  পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে জুম্মদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ করা;  চুক্তির সাথে সঙ্গতি বিধানকল্পে ১৮৬১ সালের পুলিশ এ্যাক্ট, পুলিশ রেগুলেশন, ১৯২৭ সালের বন আইন ও ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য অন্যান্য আইন সংশোধন; পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সেটেলার বাঙালিদের সম্মানজনক পুনর্বাসন প্রদান করা ইত্যাদি এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।