May 7, 2024

Always worth looking into

“রুমা সড়ক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত”

সঞ্জয় কুমার বড়ুয়া

“সড়কে কোন গাড়ি না থাকায় খালি থাকা একটি ট্রাকে করে সরকারি চাল নিতে গতকাল দুপুরে আমরা রুমা বাজারে যাচ্ছিলাম। পেছন পেছন আরও একটি খালি ট্রাক আসছিল। কমলা বাজার এলাকায় পৌঁছলে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই পেছনে থাকা ট্রাকটি হঠাৎ আমাদের বহনকারী ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়।”

বলছিলেন বান্দরবানের রুমায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুর্গম সুনসং পাড়ার লাভলী পার বম।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাভলী আরো বলেন, “রাস্তায় যথেষ্ট যায়গা ছিল। পেছনে থাকা ট্রাকটি ইচ্ছে করলেই আমাদের গাড়িকে পাশ কেটে চলে যেতে পারত।”

“বগা লেকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় আমরা খালি থাকা ট্রাকটিতে উঠেছিলাম”, তিনি বলেন।

“আমি এবং আমার সন্তান প্রাণে বেঁচে গেছি। একবেলার খাবার যোগাড় করতেই আমাদের অনেক হিমশিম খেতে হয়। জানিনা কিভাবে  কি করব”, তিনি বলেন।

“এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় আমরা  সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি”, বলেন আহত লাম কিল বমের আত্মীয় রুপুই বম।

“পেছনে থাকা ট্রাকটি খুব দ্রুত গতিতে এসে আমাদের বহনকারী ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়” বলেন আহত আর একজন লাল পিয়ান কিম বম।

“এটা দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই”, বলেন আহত লাল পিয়ান।

পেছনের ট্রাকটিতে থাকা দুজন হেলপারের মধ্যে একজন হলেন ক্য চিং কেয়াং।

“যাত্রীবাহী ট্রাকটির পেছন পেছন আমরা যাচ্ছিলাম। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। ঘটনার পর আমাদের ড্রাইভার নুরুল হাকিম পালিয়ে যান”, বলেন ক্য চিং।

“দেড় মাস ধরে ড্রাইভারের অধীনে কাজ করলেও ট্রাকের মালিক কে আমি জানিনা। আমি নিজেও আহত হয়েছি।ঘটনার পর মালিক পক্ষের কেউ আমার সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি”, তিনি বলেন।

“রুমার সড়ক দুর্ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমরা ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি ঘটন করেছি”, বলেন বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে কুলসুম।

“কমিটিতে জেলা পুলিশ সুপার, বিআরটিএ-এর সহকারী পরিচালক এবং বুয়েটের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন”, তিনি বলেন।

“আমরা ঘটনাস্থলে যাব। সম্পৃক্ত সবার সাথে কথা বলার পর বিস্তারিত বলতে পারব”,বলেন উম্মে কুলসুম।

সোমবার দুপুরে বান্দরবানের রুমা-বগা লেক সড়কের কমলা বাজার এলাকায় পেছন থেকে একটি  ট্রাক যাত্রীবাহী আর একটি ট্রাককে ধাক্কা দিলে মা-মেয়েসহ ছয়জন নিহত ও শিশু সহ অন্তত ১৪ জন আহত হন।

আহতদের মধ্যে নয়জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান , রুপুই বম।

“প্রথমে আমরা শুনেছিলাম মুখোমুখি সংঘর্ষ। পরে জানতে পারি পেছন থেকে একটা খালি ট্রাক যাত্রীবাহী আর একটা ট্রাককে ধাক্কা দিয়েছে। গাড়ির মালিক কে তা আমরা এখনো খোঁজে পায়নি। চালকদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি”, বলেন রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন।